জেনে নিন কচুশাকের পরিচিতি ও উপকারিতা - অজানা ১০১
,

ব্রেকিং

Post Top Ad

PropellerAdsPropellerAds

Tuesday, December 18, 2018

জেনে নিন কচুশাকের পরিচিতি ও উপকারিতা



কচুশাকের পরিচিতি

কচুশাক নামটা শুনতে যেন মনে হই নরমাল একটা শাক বা তরকারি। কিন্ত এটা মটেও নরমাল শাক নয়। আজ আমরা জানব কচু শাকের যত গুনাগুণ। কচুশাক সাধারণত আমাদের দেশের একটা জনপ্রিয় শাক, লোক মুখে শুনা যায় এই শাকের উপকারিতা অনেক বেশি। কচুশাক আয়রনসমৃদ্ধ বলে এর সমাদরও অনেক বেশি। আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে সব ডাক্তাররাই কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন। আমরা অনেকেই এই শাক সেই ছোট বেলা থেকেই খেয়ে আসছি।

সবজি হিসাবে কচুশাকের গুনাগুণ

শাকসবজিপ্রেমী প্রায় সব ভোজনরসিকের কাছেই কচুশাক খুবই পরিচিত একটা খাবার। ‘কচু’ কেবলই ‘কচু’ নয়, আমরা হইত অনেকেই জানি না এই শাকের উপকারিতা। সবার পরিচিত এই কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম, ‍আয়রনসহ অন্যান্য পুষ্টিগুণ যা হইত আমাদের অনেকেরই জানা নাই। কচুশাক প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের যোগান ছাড়াও বিভিন্ন রোগের পথ্য হিসেবেও অনেক বড় ভূমিকা রেখে আসছে। কচুশাকে পর্যাপ্ত অাঁশ থাকায় মানুষের দেহের পরিপাকতন্ত্রের প্রক্রিয়ায়ও কার্যকর ভূমিকা রাখে। শুধুমাত্র কচু শাক ছাড়াও এর মাটির নিচের অংশটিতেও (কচুমুখী) রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপাদান। আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ করতে কচুশাকের জুড়ি নেই।সাধারণত আমরা দু’ধরনের কচুশাক ভোজন করে থাকি বা খেয়ে থাকি। এটা হল সবুজ কচুশাক ও কালো কচুশাক।

কচুশাকের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ কচুশাকে থাকে- ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ৩.৯ গ্রাম প্রোটিন, ১০ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.২২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লেবিন), ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’, ১.৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৫৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি।

প্রতি ১০০ গাম কালো কচুশাকে থাকে-৮.১ গ্রাম শর্করা, ৬.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩৮.৭ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লোবিন), ৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ২.০ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ৪৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৭৭ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি।

কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি এবং ভিটামিনে ভরপুর। সাধারণভাবে ব্যাখ্যা করতে গেলে প্রথমে বলতে হবে কচুর ডগা এবং কালো রঙয়ের কচু শাকে আয়রন থাকে প্রচুর পরিমাণে যা পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। সাধারানত রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কচুশাক খাওয়া একরকম আবশ্যক বললেই চলে। সাধারণত যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, বিশেষ করে তাঁরা প্রচুর পরিমাণে কচুশাক খেতে পারেন। কারণ এই কচু শাকে আছে অনেক আঁশ। এই আঁশ খাবারকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে।

আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বজায় রাখতে কচু শাকের জুড়ি নেই।সাধারণত দেখা যায় আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে এমনিতেই অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায় তখন আমরা আশুস্থ হয়ে পড়ি। তখন আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচু শাক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু কি তাই আমাদেরশরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কচুশাক দারূণ ভূমিকা রাখে। তবে কচুশাক এককভাবে আমাদের শরীরে নির্দিষ্ট অঙ্গপ্রত্যঙ্গের রোগের জন্য এই শাক কাজ না করলেও অন্যভাবে যেমন এটি পুষ্টিসমৃদ্ধ হিসাবে পুরো শরীরেরই উপকার করে।

ভিটামিনযুক্ত কচু শাকের গুনাগুণ সম্পর্কে জানুন

কচুশাকের একটা সমস্যা আমরা দেখে থাকি যে মাঝে মাঝে তরকারিতে এটি সামান্য গলা চুলকায়। এটা ছাড়া কচু শাকের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা খারাপ প্রভাব নেই বললেই চলে। তবে একটা কথা আছে শাকে যতোটুকু ক্ষতিকর অক্সালিক অ্যাসিড থাকে তা আপনি যদি একরাত পানিতে ভিজিয়ে রাখেন তাহলে এটা সহজেই চলে যায়। তাই আমরা আপনাকে সাজেশন বা পরামর্শ দিব যে কচু শাক খান নিশ্চিন্তে।

কচু শাকের উপকারিতাঃ

১. কচুশাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ যা আমাদের রাতকানা, ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।

২. কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এর লৌহ উপাদান আপনার দেহে সহজে আত্তীকরণ হয়ে যায়।

৩. কচুশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, যা দেহের বৃদ্ধি ও কোষ গঠনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কচু শাকের ভিটামিন কোষের পুনর্গঠনে সহায়তা করে।

৪. ভিটামিনযুক্ত এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ, যা অন্ত্রের বিভিন্ন রোগ দূরে রাখে। পরিপাকক্রিয়াকে পুরপুরিভবেই ত্বরান্বিত করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

৫. এই শাকের আয়রন ও ফোলেট রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে অক্সিজেন সংবহন পর্যাপ্ত থাকে। এতে উপস্থিত ভিটামিন কে রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

৬. এই শাকের সবথেকে বড় উপকারিতা হল এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফসফরাস। আমাদের দাঁত ও শরীরের হাড়ের গঠনে এবং ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে এসব উপাদানে কচু শাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৭. সাধারণত বাচ্চাদের জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য দুধ কচু খাওয়ালে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আবার বড়দের ক্ষেত্রে এটা খুব কার্যকরী। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ওল কচুর রস উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়ানো হয় এবং এতে বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।

No comments:

Post a Comment