ত্রাণচোরদের কোনো ছাড় নয় - অজানা ১০১
,

Post Top Ad

.com/blogger_img_proxy/.com/blogger_img_proxy/

Thursday, April 30, 2020

ত্রাণচোরদের কোনো ছাড় নয়

no_image_card

করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনকে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। কিন্তু এরই মধ্যে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ আসছে। প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরও কোথাও কোথাও ত্রাণ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে। এমনকি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কাউকে কাউকে জেল-জরিমানাও করা হচ্ছে। তবুও থেমে নেই অনিয়ম।

এই প্রেক্ষাপটে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জেলা পর্যায়ে চলমান ত্রাণ কার্যক্রম সুসমন্বয়ে ৬৪ সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। গত ২০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৬৪ জেলার জন্য সিনিয়র সচিব ও সচিবদের মধ্যে সমন্বয় করে একটি করে জেলার দায়িত্ব দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু ত্রাণচুরি থেমে নেই। এটা খুবই দুঃখজনক।

ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে আরও একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও তিনজন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

ত্রাণে অনিয়মের জন্য এ নিয়ে মোট ৩৯ জন জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হলো। তাদের মধ্যে ১৬ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ২২ জন ইউপি সদস্য এবং একজন জেলা পরিষদ সদস্য।

বুধবার কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা হলেন- নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চর-আড়ালিয়া ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. বাচ্চু মিয়া, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শরিফুল ইসলাম এবং দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হাবিবুর রহমান।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজার জেলার টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আইনানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন।

সদস্যদের বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নরসিংদী জেলার চর-আড়ালিয়া ইউপি সদস্য মো. বাচ্চু মিয়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। নরসিংদীর ডিসি আইন অনুযায়ী তাকে অপসারণের সুপারিশ করেছেন।

এছাড়া কুষ্টিয়া জেলার নন্দলালপুর ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষের জন্য বরাদ্দ সরকারি ত্রাণলুটের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। দৌলতপুর ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান সরকারি ত্রাণ ভুয়া মাস্টাররোলে বিতরণ দেখিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় কুষ্টিয়ার ডিসি আইন অনুযায়ী তাদের পদ হতে অপসারণের সুপারিশ করেছেন।

এই চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে 'স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯' এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে আলাদা আলাদা কারণ দর্শানোর নোটিশে কেন তাদের চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, সেই জবাব পত্রপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

কথায় আছে 'চোরা না শুনে ধর্মের বাণী।' সরকার যত কঠোর হচ্ছে ত্রাণচোররাও হচ্ছে ততটাই বেপরোয়া। সামান্য লোভ তারা সংবরণ করতে পারছে না এই মহাদুর্যোগেও। দুর্যোগে যেখানে মানবিকতা জেগে ওঠার কথা সেখানে উল্টো কিছু মানুষ হয়ে উঠছেন সুযোগসন্ধানী। এদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে। ত্রাণচোরদের কোনো ছাড় নয়।

পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তরা যেন ত্রাণ পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে যেকোনো মূল্যে। যে মহামারি চলছে তাতে মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষজন আছে ভয়াবহ সংকটে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

এইচআর/বিএ/জেআইএম

No comments:

Post a Comment